অনেকেই রাগ বা ক্রোধকে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করে
থাকেন। হাসি-কান্নার মতো রাগ মানুষের একটি স্বাভাবিক আবেগ বা অনুভূতি। একজন
ব্যক্তি যখন কোনো হুমকি বা ভীতির সম্মুখীন হলে রাগ
প্রদর্শন করে থাকে, যা খুবই স্বাভাবিক একটি প্রতিক্রিয়া। এমনকি আমাদের
বিভিন্ন কাজের পেছনে রাগ বা ক্রোধ একটি ইতিবাচক প্রভাবক হিসেবে সক্রিয়
ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে একজন ব্যক্তির নিজের
উপর। রাগ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে ও একজন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে
গেলে তা অন্য কোনো মানসিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
মাত্রাতিরিক্ত
রাগের কারণে একজন ব্যক্তির মধ্যে আক্রমণাত্মক মনোভাব সৃষ্টি হয়। এ ধরনের
ব্যক্তি একরোখা ও অসহিষ্ণু হয়ে থাকে। যার ফলে তারা খুব সহজেই মারামারি ও অন্য
কোনো ধরনের সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে।
এ
সমস্যা ক্রমাগত দেখা দিলে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হতে
পারে। এ সমস্যা প্রতিরোধের জন্য সমস্যার মূল কারণ জানা প্রয়োজন।
সাধারণত কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ক্রোধ ও আক্রমণাত্মক আচরণের লক্ষণ বেশি দেখা
যায়। কেননা অন্যদের তুলনায় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা,
বিষণ্নতা ও অবসাদ বেশি মাত্রায় কাজ করে। একই সাথে তাদের মধ্যে ধূমপান, মাদকের
ব্যবহার ও খাদ্যাাভ্যাসের অস্বাভাবিকতাও পরিলক্ষিত হয়।
যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে
লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতি:শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার
সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা
দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর: এজন্য বিভিন্ন বিনোদনমূলক কাজ ও কগনেটিভ বিহ্যাভিয়র থিওরির সাহায্যে আচরণে
পরিবর্তন আনা সম্ভব। কগনেটিভ বিহ্যাভিয়র থিওরির মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের
চিন্তাধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে আচরণগত বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা পরিবর্তনে
সক্ষম হয়।
হেলথ টিপস্
ক্রোধ ও আক্রমণাত্মক আচরণ প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে-
সহিংসতা এড়িয়ে চলতে হবে।
যেকোনো সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। বাদানুবাদ বা তর্ক সহিংসতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
রাগান্বিত অবস্থায় কোনো কিছু বলা বা করার আগে চিন্তা করতে হবে।
শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে হবে।
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
অ্যালকোহল ও মাদকের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে হবে।
শিশুদের সহনশীলতার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে ও তাদের প্রতি যত্নশীল হয়ে উঠতে হবে।
যেসব
টিভি প্রোগ্রাম বা ভিডিও গেম শিশুদের মধ্যে হিংসাত্মক ও বিদ্বেষপূর্ণ
মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে সেগুলি শিশুদের দেখতে দেওয়া যাবে না।
বন্দুক বা গুলি শিশুদের হাতে দেওয়া উচিৎ নয়। তাই বাড়িতে বন্দুক থাকলে তা নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।