বর্ণনা

গলা ব্যথা বা স্বরভঙ্গের জন্য কণ্ঠস্বর কর্কশ হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় কথা বলতে অসুবিধা হয়, এবং কণ্ঠস্বর দুর্বল ও ভারী হয়ে যায়। এছাড়া এর কারণে কণ্ঠস্বর ফ্যাসফ্যাসে হয়ে যায় বলে তা আর কোমল শোনায় না।

ল্যারিঞ্জাইটিসের (laryngitis) কারণে কণ্ঠস্বর কর্কশ হয়ে যায়। এ অবস্থায় ল্যারিঙ্গস বা স্বরনালীতে ইনফ্লমেশন বা প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই লক্ষণ কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা তা যে কোনো গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন: 

নাকের পলিপ (Nasal polyp)	খাদ্যনালীর ক্যান্সার (Esophageal cancer)
ল্যারিঞ্জাইটিস/বাকযন্ত্রের প্রদাহ (Laryngitis)	গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ/ বুকজ্বালা (Gastroesophageal reflux disease)
ফ্যারিঞ্জাইটিস (Pharyngitis)	র‍্যাবডোমায়োলাইসিস (Rhabdomyolysis)
কন্ডাক্টিভ হেয়ারিং লস (Conductive hearing loss)	ক্রুপ (Croup)
এসেনশিয়াল ট্রেমর (Essential tremor)	অ্যাকালাসিয়া (Achalasia)
লিম্ফোমা (Lymphoma)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

কাশি (Cough)	গলা ব্যথা (Sore throat)
নাক বদ্ধ হয়ে যাওয়া (Nasal congestion)	খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া (Difficulty in swallowing)
জ্বর (Fever)	কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গত হওয়া (Coughing up sputum)
গলায় চাপ অনুভব করা (Throat feels tight)	শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া বা কানে কম শোনা (Diminished hearing)
বুকে ভার অনুভব করা (Congestion in chest)	কানে বদ্ধতা অনুভব করা (Plugged feeling in ear)
গলায় জ্বালাপোড়া হওয়া (Throat irritation)	হাঁচি (Sneezing)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

শ্বাসনালীর উপরের অংশে ভাইরাসজনিত ইনফেকশন দেখা দিলে কণ্ঠস্বর কর্কশ হয়ে যায়। এছাড়া যেসব কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় ও একইসাথে অবস্থার অবনতি হয় সেগুলো হলো:

• এসিড রিফ্লাক্স।
• ধূমপান।
• ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও অ্যালকোহল ব্যবহার।
• চিৎকার করা এবং ভোকাল কর্ডের উপর চাপ পড়া।
• অ্যালার্জি।
• নিঃশ্বাসের সাথে বিষাক্ত পদার্থ শরীরের ভেতরে প্রবেশ করা।
• ক্রমাগত সজোরে কাশি দেওয়া।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

• (ক) কাশি ৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হলে কি এর কারণে কন্ঠস্বর কর্কশ হতে পারে?
• (খ) কিভাবে এ সমস্যা থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠা যায়?

উত্তর: ব্রঙ্কাইটিস বা এ্যাজমার কারণে মাত্রাধিক কাশি হয়ে থাকে। কাশি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে ও ক্রমাগত কাশি হলে ভোকাল কর্ডের উপর চাপ পড়ে, ফলে কণ্ঠস্বর কর্কশ হয়ে যায়।

উত্তর: এ অবস্থায় যতোটা সম্ভব কম কথা বলতে হবে। ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে। তবে এ সমস্যা দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী হলে নাক-কান-গলার ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হবে। 

হেলথ টিপস্‌

ভোকাল কর্ডের যেকোনো সমস্যা বা ত্রুটি প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করতে হবে:

• ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, এমনকি সিগারেটের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
• অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।
• প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
• বারবার খাকারি দিয়ে গলা পরিষ্কার করা উচিত নয়।