শারীরিক বৃদ্ধির অভাব (Lack of growth)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

জন্মের পর প্রথম কয়েক বছর পর্যন্ত শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হতে দেখা যায় না। শিশুর এই সমস্যা কোন নির্দিষ্ট রোগের আওতায় পড়ে না। শিশুর ওজন ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ক্যালরি। যেসব নবজাতক ও শিশুরা প্রয়োজনীয় ক্যালরি গ্রহণ করতে পারে না তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। জন্মের পর প্রথম বছরে শিশুর মানসিক বিকাশ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই সময়ে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শিশুর এই বৃদ্ধি মারাত্নক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

ডায়াবেটিস জনিত কিডনির রোগ (Diabetic kidney disease) নবজাতকের জন্ডিস (Neonatal jaundice)
মৃগী রোগ (Epilepsy) অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া (Aplastic anemia)
অটিজম (Autism) টারনার সিন্ড্রোম (Turner syndrome)
সেরিব্রাল পালসি (Cerebral palsy) গ্লুকোকরটিকোয়েড ডেফিসিয়েন্সি (Glucocorticoid deficiency)
কন্ডাক্টিভ হেয়ারিং লস (Conductive hearing loss) কনডাক্ট ডিজঅর্ডার (Conduct disorder)
ক্রিপ্টোরকিডিজম (Cryptorchidism) ডেভলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটি (Developmental disability)
পালমোনিক ভাল্ভ ডিজিজ (Pulmonic valve disease) হাইড্রোসেফালাস (Hydrocephalus)
অ্যাস্পারজারস সিন্ড্রোম (Asperger's syndrome) অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (এ-ডি-এইচ-ডি) (Attention deficit hyperactivity disorder (ADHD))
হরমোন ডিজঅর্ডার (Hormone disorder) কঞ্জেনিটাল ম্যালফরমেশন সিন্ড্রোম (Congenital malformation syndrome)
আই অ্যালাইনমেন্ট ডিজঅর্ডার (Eye alignment disorder)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

এই সমস্যাটি ছেলেদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। যেসব বিষয়ের কারণে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেগুলো হলোঃ

শারীরিক অসুস্থতাঃ

  • জেনেটিক ডিজঅর্ডার- সিস্টিক ফাইব্রোসিস (Cystic fibrosis), ডাউন সিন্ড্রোম (Down Syndrome), টারনার সিন্ড্রোম (Turner syndrome)
  • কোন ধরনের অঙ্গহানি যেমন ঠোঁট বা তালু কাটা।
  • গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ডিজিজ- রিফ্লাক্স (Reflux), ক্রন’স ডিজিজ (Crohn's disease), হেপাটাইটিস বা সিরোসিস (Hepatitis or cirrhosis), হার্শপ্রাংস ডিজিজ (Hirschsprung's disease), প্যানক্রিয়াটিক ইন্সাফিসিয়েন্সি (Pancreatic insufficiency)
  • ক্রনিক ইউরিনারী ট্র্যাক্ট ইনফেকশন
  • কিডনী ফেইলর
  • নির্দিষ্ট কিছু খাবারের প্রতি অসহিষ্ণুতা
  • হার্ট ও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ যেমন- হার্ট ফেইলর (Heart failure), অ্যাজমা (Asthma), কঞ্জেনিটাল হার্ট অর লাং ডিফেক্টস (Congenital heart or lung defects)
  • এন্ডোক্রাইন ডিজিজ- ডায়াবেটিস, পিটুইটারি বা থায়রয়েড গ্ল্যান্ড ডি্জঅর্ডার
  • এইচ-আই-ভি বা টক্সোপ্লাজমোসিস
  • ফেটাল অ্যালকোহল সিন্ড্রোম
  • লেড পয়জনিং

পারিবারিক ও সামাজিক কারণঃ

সঠিক পুষ্টির অভাব, নিয়মিত খাবার না খাওয়া, বুকের দুধ খেতে অসুবিধা, মা-বাবার দাম্পত্য কলহের মধ্যে থাকা, শিশু শারীরিক নির্যাতনের শিকার হলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ যদি শিশু নিয়মিত না খায় বা হঠাৎ করে তার ওজন কমে যায় তবে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

উত্তরঃ এই সমস্যার কারণে শিশুর মানসিক ও শারীরিক অবস্থা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করে এই লক্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভবঃ

খাদ্যাভ্যাসঃ

  • শিশুকে একটু পর পর খেতে দিতে হবে।
  • খাবারে বৈচিত্র্যতা থাকতে হবে।
  • খাবারে পনির, মাখন থাকতে হবে।
  • দিনে অন্তত আধা লিটার দুধ পান করতে হবে।
  • ফলের রস বেশি খাওয়া যাবে না।

এছাড়াও মা-বাবার উচিৎ শিশুকে নিজ হাতে খাওয়ানো। শিশুকে কখনোই জোর করে খাওয়ানো যাবে না। শিশুকে ৩০ মিনিট পর পর খাওয়াতে হবে।