মাসিকের পূর্বে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়া (Premenstrual tension or irritability)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এ সমস্যা প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম (Premenstrual syndrome) বা সংক্ষেপে পি-এম-এস (PMS) নামে পরিচিত। একজন মহিলার মাসিক শুরু হওয়ার পূর্বে যেসকল মানসিক ও শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় তাকে প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম বা পি-এম-এস বলা হয়।সন্তান জম্নদানে সক্ষম প্রায় সব মহিলারই মাসিকের সময় কিছু সমস্যায় ভুগে থাকেন, যেমনঃ পেট ফুলে যাওয়া বা স্তন স্পর্শকাতর হয়ে ওঠা অথবা ব্যথা হওয়া। যাদের PMS (Pre-Menstrual Syndrome) রয়েছে তারা নির্দিষ্ট কিছু শারীরিক এবং মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন, এবং এই সমস্যা গুলো মাসিকের luteal phase এ দেখা দেয় যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। কোনো মহিলার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্ট কিছু মানসিক উপসর্গ দেখা দিলে তবেই তা প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতেও পারে, আবার নাও দেখা দিতে পারে। এই শারীরিক ও মানসিক উপসর্গগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে প্রত্যেক মহিলার ক্ষেত্রে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা মোটামোটি একই রকমের হয়ে থাকে এবং মাসিক শুরু হওয়ার দশ দিন আগে দেখা দেয়। মাসিক শুরু হওয়ার ঠিক পূর্ব মূহুর্তে বা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে পুনরায় ঠিক হয়ে যায়।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-   

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যেসকল কারণে PMS দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলোঃ

  • পরিবারের অন্যকারো একই সমস্যা থাকা।
  • ত্রিশ বছর বয়সের দিকে (ত্রিশের পর থেকে এই লক্ষণ আরো তীব্র হতে থাকে)।
  • বিষন্নতা, উদ্বেগ ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা।
  • ব্যায়াম ও শারীরিক অনুশীলনের অভাব।
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
  • দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কম থাকা।
  • অত্যাধিক ক্যাফেইনের ব্যবহার।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম এবং হিস্প্যানিকদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ কম। অপরদিকে, শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ PMS এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলার ক্ষেত্রে দেখা যায় মাসিকের পূর্বে অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক সমস্যা আরো বেড়ে যায়। এই সমস্যাগুলো হলো মাইগ্রেইন, অ্যাজমা, অ্যালার্জি, খিঁচুনি, বিষন্নতা, এ্যাঞ্জাইটি ডিজঅর্ডার ও খাদ্যাভাসের বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা।

উত্তরঃ একজন মহিলার একইসাথে PMS ও মেন্সট্রুয়াল ক্রামপস্‌ থাকতে পারে। তবে PMS এ মাসিকের পূর্ববর্তী সময়ে সমস্যা দেখা দেয় এবং মেন্সট্রুয়াল ক্রামপস্‌ মাসিক চলাকলীন সমস্যে দেখা দেয়।

হেলথ টিপস্‌

PMS নিয়ন্ত্রণে করণীয়ঃ

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • পুষ্টিকর খাবার খান। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার, প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন।
  • ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, চকোলেট ও অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • প্রয়োজন মত বিশ্রাম নিন। অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন।