হীনমন্যতায় ভোগা (Low selfesteem)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি পরনির্ভরশীল হওয়া, অপরাধবোধে ভোগা, অসহায় বোধ করা, পরিচয় সঙ্কটে ভোগা, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা, অনুপ্রেরণার অভাব ও আত্মবিশ্বাসের অভাব হিসেবেও পরিচিত।

মনোবিজ্ঞানের ভাষায় আত্মসম্মান বলতে নিজের মর্যাদা সম্পর্কে একজন ব্যক্তির মনোভাব বোঝানো হয়। সাফল্য, হতাশা, অহংকার ও লজ্জার অনুভূতি এই মনোভাব গঠন করে। একজন ব্যক্তির আত্মসম্মান তার আত্মসচেতনতার সাথেও ওতোপ্রতভাবে জড়িত। আত্মসম্মানের অভাব একজন ব্যক্তির সম্পর্ক, পেশা ও শারীরিক অবস্থাসহ জীবনের প্রত্যেকটি অংশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে মেন্টাল হেলথ্ কাউন্সিলিং (mental health counseling)-এর মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।

 

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে:  যেমন-

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যে সকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

শৈশবের শুরুতেই আত্মসম্মান গঠনের সূত্রপাত ঘটে। যেসব বিষয় আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করতে পারে সেগুলি হলোঃ

  • নিজের চিন্তা ও উপলব্ধি।
  • অন্য ব্যক্তিদের আচরণ।
  • বাড়ি, স্কুল, কর্মক্ষেত্র এবং সামাজিক ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা।
  • অসুস্থতা, অক্ষমতা ও আঘাত।
  • ধর্ম ও সংস্কৃতি।
  • সামাজিক অবস্থান ও ভূমিকা।
  • মিডিয়ার প্রভাব।

 

বাবা-মা, ভাইবোন, বন্ধু, শিক্ষক ও অন্যান্য পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক আপনার আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করে। নিজের  সম্পর্কে আপনার যে ধারণা, তা অনেকাংশে আপনার সম্পর্কে এইসব ব্যক্তিদের ধারণার প্রতিফলন। অন্য ব্যক্তিদের সাথে আপনার সম্পর্ক যদি ভালো থাকে, তাহলে নিজের সম্পর্কে আপনার ধারণা ইতিবাচক হবে, এবং আপনার আত্মসম্মান বৃদ্ধি পাবে। আপনার সম্পর্কে যদি অন্য ব্যক্তিরা নেতিবাচক মন্তব্য করে, এবং আপনি যদি তাদের দ্বারা অবমূল্যায়িত ও সমালোচিত হন, তাহলে আপনি আত্মসম্মানের অভাবে ভুগতে পারেন।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

জাত:  হিস্প্যানিক ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: সার্জারি শারীরিক সমস্যার সমাধান করতে পারে।  কিন্তু আত্মসম্মানের অভাব যেহেতু মানসিক সমস্যা, তাই এর উপর সার্জারির কোনো প্রভাব নেই।


শারীরিক বিকৃতির ফলে কোনো ব্যক্তির আত্মসম্মানের অভাব হলে সার্জারি করার পর তিনি উপকৃত হতে পারেন। কিন্তু অন্য কোনো কারণে আত্মসম্মানের অভাব দেখা দিলে তা সার্জারির মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়।

উত্তর: এই বয়সের সব শিশুদের উল্লিখিত সমস্যাটি থাকে না। তাছাড়া আত্মসম্মানের আলাদা আলাদা মাত্রা রয়েছে। তাই বিষয়টি একজন শিশুর অভিজ্ঞতা ও পরিপার্শ্বের উপর নির্ভর করে।
 

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করে আপনি আত্মসম্মান বৃদ্ধি করতে পারেন [কগনিটিভ বিহ্যাভিওরাল থেরাপির( cognitive behavioral therapy) উপর ভিত্তি করে ]-

  • আপনার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে এমন পরিস্থিতি ও মুহূর্ত চিহ্নিত করা।
  • নিজের চিন্তা ও বিশ্বাস সম্বন্ধে সচেতন হওয়া।
  • নেতিবাচক ও ভ্রান্ত চিন্তাকে প্রতিহত করুন। আত্মসম্মানের হানি ঘটায় এমন চিন্তাধারাগুলির উপর মনোযোগ দিন-
  • অসংলগ্ন চিন্তা।
  • মানসিক পরিশুদ্ধির চেষ্টা করা।
  • নেতিবাচক বিষয়কে ইতিবাচক বিষয়ে রূপান্তর।
  • জোরপূর্বক নেতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।
  • অনুভূতিকে বাস্তব হিসেবে গণ্য করা।
  • নেতিবাচক আত্মকথন।

আপনার চিন্তা ও বিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করুন। এরপর নেতিবাচক ও ভ্রান্ত চিন্তাগুলিকে ইতিবাচক ও গঠনমূল চিন্তা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করুন। এ ব্যাপারে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি আপনাকে সাহায্য করতে পারে-

  • আশাব্যঞ্জক চিন্তা করা।
  • নিজেকে ক্ষমা করা।
  • ‘করা উচিৎ’ বা ‘করতে হবে’- এ ধরনের চিন্তা না করা।
  • ইতিবাচক বিষয়ের উপর মনোযোগ দেওয়া।
  • নেতিবাচক চিন্তাগুলিকে চিহ্নিত করা।
  • নিজেকে উৎসাহ দেওয়া।